ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে মানবাধিকার কর্মী গ্রেপ্তার

0 ১৬৬

উত্তরখানে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে কথিত মানবাধিকার কর্মী গ্রেপ্তার

এম রাসেল সরকার:

রাজধানী উত্তরখানের চানপাড়া এলাকার কসমেটিকস ব্যবসায়ী মো. হেমায়েত উদ্দিন ওরফে সোহেল কাজীর ব্যবসার সুবাধে এক নারীর সঙ্গে পরিচয়। কয়েক দিন পর হঠাৎ করে একদিন ঔ নারী ফোন দিয়ে বলেন ‘আমি দক্ষিণ খানের এমারত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় পেছনের একটি বাসায় সমস্যায় পড়েছি। আপনি দ্রুত আসেন। ওই দিন সমস্যার কথা বলে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একাধিক বার ফোন করেন ওই নারী।

তার একাধিক ফোন ও মানবিক দিক বিবেচনা করে দক্ষিণখান আইনুছ বাগের ৩০ / ১ নম্বরের বাসায় শুক্রবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে যান ব্যবসায়ী হেমায়েত। সেখানে যাওয়া মাত্রই ফোন করা ওই নারীসহ অজ্ঞাত আরও ৫ / ৬ জন লোক তাকে টেনে হিঁচড়ে নিচ তলার একটি রুমে নিয়ে যায়। পরে রুমটির তালা মেরে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

সেখানে কথিত মানবাধিকার কর্মী মোছা. লীলা ওরফে বিজলি ওরফে নীলা, নাজমা বেগম, মো. শুভ, বেল্লাল ও মো. রানা ওরফে অটো রানা মিলে ব্যবসায়ীর পরনে শার্টটি ছিঁড়ে ফেলে। অপর কথিত মানবাধিকার কর্মী মোছা. রিতা ব্যবসায়ীর খালি গায়ের ভিডিও ধারণ করে। পরে তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

টাকা না দিলে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় কথিত মানবাধিকার কর্মীরা। এদিকে ওই ব্যবসায়ীর কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাই তাকে নিয়ে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দশ হাজার টাকা নেন। পরের দিন (শনিবার) আরও দশ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান তারা। কথা মতে পরের দিন কসমেটিকসের দোকান থেকে কথিত মানবাধিকার কর্মী রানা ওরফে অটো রানা আরও পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের কসমেটিকস নেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে জানালে মামলার ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। পরে ওই ব্যবসায়ীর ডাক চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ওই কথিত মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে বিজলি ওরফে নীলা ও নাজমা বেগমকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় গতকাল শনিবার রাতে একটি মামলা করেন। পরে রোববার সকালে মামলার এজাহার ও থানা-পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান সজিব বলেন, কথিত মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে বেআইনিভাবে মারধর, ক্ষতিসাধন, চাঁদা আদায়, চাঁদা দাবির পর চুরি, ভয়ভীতি ও হুমকির অভিযোগে করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কথিত মানবাধিকার কর্মী নীলা ওরফে বিজলি, কথিত মানবাধিকার কর্মী নাজমা বেগম, রিতা ও বেল্লাল। বাকিদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকর উপজেলার রাঙাটুলি গ্রামের সোহারাব হোসেনের মেয়ে নীলা ওরফে বিজলী, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ফরিদ আহমেদ স্বপনের স্ত্রী নাজমা বেগম, গাজীপুরের কোনাবাড়ী উপজেলার দেউলিয়াবাড়ী গ্রামের মৃত খবির উদ্দিনের মেয়ে রিতা ও দক্ষিণখানের বেল্লাল। তারা হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশন নামের একটি কথিত মানবাধিকার সংগঠন, দৈনিক প্রথম বেলা ও আলোকিত সকাল পত্রিকার পরিচয় দিতেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.