ইলিশ কমে যাওয়ায় হু হু করে বাড়ছে দাম
ইলিশ কমে যাওয়ায় হু হু করে বাড়ছে দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আবারও ইলিশ সংকট দেখা দিয়েছে। দিনে ২-৩টি ইলিশবাহী ট্রলার আসছে। যাতে ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ মণ মাছ থাকছে। ইলিশ কমে যাওয়ায় হু হু করে বাড়ছে দাম।
ক্রেতারা বলছেন, বিশেষ মনিটরিং ছাড়া ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ইলিশের সংকট সৃষ্টির পেছনে বড় ধরনের সিন্ডিকেট রয়েছে। তবে আড়তদার ও ট্রলারের মাঝিরা দুষছেন বৈরী আবহাওয়াকে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু সে তুলনায় মাছ নেই। কেজির ওপরে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ টাকা দরে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়। ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৪০০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকার ওপরে। এছাড়া রুই ৪০০, গলদা চিংড়ি ১১০০, পোমা মাছ ৪০০, চাষের কৈ ২০০, শিং ৪৫০, ট্যাংরা ৩৫০, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, গ্লাস কাপ ২৫০ টাকা, সিলভার কাপ ২০০, কোরাল ১২০০ , রূপচাদা ১১০০ ,পাঙাশ ১৭০-১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ী জুয়েল বলেন, দুই-তিন বছর আগেও দিনে দেড় থেকে দুই হাজার মণ ইলিশ আসতো বরিশালের মোকামে। কিন্তু এ বছর ট্রলারও তেমন আসে না মাছও আসে না। ভাদ্র-আশ্বিনে সাধারণত ইলিশ মাছের ভরা মৌসুম। মহিপুর, পাথরঘাটা মোকামে সন্তোষজনক ইলিশ আসলেও বরিশাল মোকামে দিনে ২-৩টা ট্রলার আসতে পারে। এই মাছে বরিশাল শহরের মানুষরেই হয় না।
আরেক ব্যবসায়ী ফারুক মোল্লা বলেন, মাছ না থাকায় ব্যবসা করতে পারছি না। আর অল্প যা মাছ আসে তা দরদামে সামর্থ্যে পেরে উঠছে না ক্রেতারা। তারা দাম জিজ্ঞেস করতেই ভয় পায়। কী করবে, উপায় নেইতো। আগে যে মাছের কেজি ছিল ৪০০-৫০০ টাকা সেই মাছ এখন হাজার টাকা দিয়েও পাচ্ছে না।
পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন শিকদার বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুমে আগে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বিক্রি হতো। এখন মাছের এমন সংকট দেখা দিয়েছে যে ১৭০ আড়ৎদার মিলে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বিক্রি করতে কষ্ট হয়।
তিনি জানান, নদী-সাগরে বৈরী আবহাওয়া আর কাঁচা বাজারে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাছ ধরায় খরচ বেড়েছে। এজন্য ইলিশের দামও বেড়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে জালে। কারণ ওই সময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইলিশ সাধারণত মাসের ওপর নির্ভর করে ওপরে উঠে আসে না। উঠে আসে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশে। সুতরাং বৃষ্টি বাড়লে ইলিশ বাড়বে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বরিশাল পোর্ট রোড থেকে ১৯ টন ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়। এটি ছিল মৌসুমের প্রথম চালান।