মানুষ ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে – জিএম কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর ফলে মানুষ ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তারা স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। তারা ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ, ভোটাধিকার ও সুষ্ঠু রাজনীতি চায়।
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা বলেন। এসময় সাবেক যুগ্ম কর কমিশনার জহিরুল ইসলাম জহির আনুষ্ঠানিকভাবে জাপায় যোগ দেন।
এসময় জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা সংসদে এবং বিবৃতি দিয়ে গণমানুষের ভোটাধিকারের দাবিতে সোচ্চার আছি। বিদেশিরাও ভোটাধিকারের প্রশ্নে জোড়ালো ভূমিকা রাখছে। এ কারণেই সব বিষয়ে একটি অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।’
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জন্য ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ক্লিন এনার্জির কারণে একসময় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কদর ছিল। এখন অনেকেই আর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে না। আবার যাদের আছে তারাও বন্ধ করে দিচ্ছে। স্বল্প খরচ ও পরিবেশের ক্ষতি হবে না এমন ভাবনা থেকেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু এটা থেকে যে বিকিরণ হয় তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি বিপজ্জনক প্রযুক্তি।’
‘দুর্নীতি না হলেই এটি সস্তা বিদ্যুৎ হতে পারে। একই কোম্পানি থেকে ভারত একই মডেলের দুই হাজার মেগাওয়াটের দুটি পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করেছে পাঁচ বিলিয়ন ডলার খরচে। আর আমাদের দেশে এই কোম্পানি থেকে ২৪০০ মেগাওয়াটের দুটি পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৩ বিলিয়র ডলারের বেশি। এই খরচ ১৬ বিলিয়ন পর্যন্ত হতে পারে। যে প্রকল্প তৈরিতে ভারত ৬ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ করে, সেই প্রকল্প করতে আমাদের খরচ হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন। বেশি খরচ হওয়ার কারণে এই বিদ্যুৎ তো সস্তা হবে না।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান ইউক্রেনের চেরোনবিল এবং আমেরিকা ও জাপানেও পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছিলো। সামান্য দুর্ঘটনায় বিশ কিলোমিটার এলাকায় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে। বিকিরণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঐ এলাকায় কোনো প্রাণী বসবাস করতে পারবে না। রাশিয়ার মত দেশ দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায় ১০ থেকে ১৫ বছর কাউকে ঢুকতে দেয়নি। আর, বড় ধরনের দুর্ঘটনায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিকিরণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষও আমাদের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আতঙ্কে আছে। পারমানবিক দুর্ঘটনা হলে আমাদের মতো জনবহুল দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে।’
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, ভাইস চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি ও জাহাঙ্গীর আহমেদ।