বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য 

0 ৪০

বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য 

নিজস্ব সংবাদদাতা:

দেশে যে হারে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে, সে হারে কর্মক্ষেত্র বাড়ছে না। ফলে অনেকেই বেকার থেকে যাচ্ছে। চাকরি যেন ‘সোনার হরিণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে পড়ালেখা শেষ হলেও জুটছে না কাঙ্ক্ষিত চাকরি।

 

শিক্ষিত ও মেধাবীদের পছন্দের পেশা শিক্ষকতা। বেসরকারি বিদ্যালয়ে ইতোপূর্বে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে। এতেকরে শিক্ষকরা ইনডেক্সধারী হতে অনেক সময় লেগে যেতো। এসব সমস্যা সমাধানকল্পে সরকার বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও নিয়োগ প্রথা চালু করে।

 

কার্যত হচ্ছে তার উল্টো। এনটিআরসিএ এখন অনিয়ম-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত লুটতরাজদের আঁতুড় ঘর বলেও দাবি করছে একাধিক সূত্র। বিষয়টি পুঁজি করে এক শ্রেণির দালাল চক্রের আবির্ভাব হয়। তারা তৈরি করে নিজেদের সিন্ডিকেট।

নিয়োগ বানিজ্যের ডালপালা এখন দেশব্যাপী বিস্তৃত।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে সারা দেশ থেকে দালাল চক্রের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদনকৃত প্রার্থীদের নিকট হতে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার নাম করে ৩-৫ লক্ষ ও চাকরীর প্যাকেজ বাবদ ৬-১০ লক্ষ করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

 

সম্প্রতি, এনটিআরসিএ ‘ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ‘ পদে ৩ জন প্রার্থীর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার একটি লিখিত অভিযোগ দূর্নীতি দমন কমিশনে জমা পড়েছে। উক্ত অভিযোগ পত্রে ৩ জন প্রার্থীর রোল নম্বর সম্বলিত আবেদন রয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনটিআরসিএ কিছু কর্মকর্তা, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেসরকারি শিক্ষক, কর্মচারী মিলে একাধিক সিন্ডিকেট আছে। হবিগঞ্জ থেকে রাশেদুল, নোয়াখালী থেকে সিরাজুল, সিলেট থেকে হাবিব, ময়মনসিংহ থেকে কাদের,রাঙ্গামাটি থেকে বিনয়, রাজশাহী থেকে মজিদ, চট্টগ্রাম থেকে নাজিম, রংপুর থেকে হাফিজুল, কিশোরগঞ্জ থেকে তাহের, লালমনিরহাট থেকে অনিল,সিরাজগঞ্জ থেকে রিগ্যান, জয়, নারায়ণগঞ্জ থেকে রফিক, বক্কর, ঢাকা থেকে হারিজ, আমিন, রাজ্জাক, ফারুক সহ আরো অনেকেই।

 

এনটিআরসিএ’র একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অধিকতর দুদক ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত করলে দুর্নীতির এই মূল উৎঘাটন করা সম্ভব।’

তাদের মতে, কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি এবং নানাবিধ অনিয়মের কারণে এনটিআরসিএ’র সুনাম ক্ষুন্ন হতে হতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ এখানে ভোতা হয়ে গেছে। যা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

 

বর্তমানে এই সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থান গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিয়ে একাধিক কর্মকর্তা, শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নজরদারি শুরু করেছেন। একই সঙ্গে কারো কারো বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.