আমাদের বিপক্ষে যারা আছে তারা বলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

0 ৬৬

আমাদের বিপক্ষে যারা আছে তারা বলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ঐক্য ও সম্প্রীতির দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এ দেশকে রংধনু নেশনে পরিণত করতে চান। অর্থাৎ একটি রংধনুতে যে রকম অনেকগুলো রং থাকে। সে রঙের মধ্যে আমাদের ১৭-১৮টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী যারা আছে, বাঙালি যারা আছে সবাই একেকটি রং। সব রং মিলে কিন্তু রংধনু অর্থাৎ রেইনবো নেশন বাংলাদেশ।

আজ (মঙ্গলবার) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী নাসিমন ভবন বিএনপি কার্যালয়ের মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়ুয়ার পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আপনারা যারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিশ্বাস করেন এটার মূল উৎস হচ্ছে যে যে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করবে। যার যার ভাষা ও ঐতিহাসিক ভূমিকা আছে সেটাকে পালন করবেন। এটা বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের একটি অংশ। এর মধ্যে সব ধর্মের মানুষ আছে। সব সম্প্রীতির মানুষ আছে। সব ইতিহাসের মানুষ আছে। সব ভাষার মানুষ আছে। সবাই মিলে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।

তিনি বলেন, আমাদের বিপক্ষে যারা আছে তারা বলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। শুধু যারা বাঙালি তাদের জন্যই কি বাংলাদেশ হয়েছে? সমস্ত বাংলাদেশের মধ্যে যারা বসবাস করে সকলের জন্য বাংলাদেশ। সকলেই সমানভাবে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা, অধিকার পাবে। এটা আমাদের ধারণ করতে হবে। এটাই হচ্ছে বিএনপির মূলমন্ত্র।

তিনি বলেন, যারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মন্দির ভেঙেছে। ২০১২ সালে রামু মন্দিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় ছবি আছে। আমরা দেখেছি সব। এটার কোনো বিচার হয়নি। উখিয়াতে মন্দিরে আক্রমণ করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন, কোনো বিচার হয়নি। হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ করেছে কুমিল্লায়। মিথ্যা মামলা দিয়েছে অন্য মানুষের নামে। সুতরাং এদের থেকে যদি বাঁচতে হয় আজ সম্মিলিতভাবে আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একটি ঐক্যবদ্ধ জায়গায় যেতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, আওয়ামী দুঃশাসন দেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। বর্তমান সময়টা জাতির জন্য সবচেয়ে সংকটময়। এ সময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা অনেক চ্যালেঞ্জের। এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণের জন্য সকল ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আজকে প্রতিহিংসার কারণে শাসকগোষ্ঠী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় মুমূর্ষু অবস্থায় রেখেছে। বিরোধী কেউ যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেই নির্বাচনী পরিকল্পনা সরকার তৈরি করেছে। তার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। সব রাজনৈতিক দল এখন সরকারের পদত্যাগ চাইছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দাবি আদায় করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধ অহিংসা ও মানুষে মানুষে গভীর ভালোবাসার বাণী প্রচার করে গেছেন। আজ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে রক্তপাত, সংঘাত ও সংঘর্ষে মানবজাতি ক্ষতবিক্ষত। এ শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে গৌতম বুদ্ধের হিতোপদেশ মানুষকে অহিংসার পথে, ন্যায়ের পথে চালিত করবে। তাই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদই সবাইকে একই বন্ধনে আবদ্ধ করে। শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও আমাদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত গণতন্ত্র ও শান্তি ফিরে আসবেই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.