বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে এই ছিল আমাদের জীবন

0 ৮৬

বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে এই ছিল আমাদের জীবন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

শৈশবের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছোটবেলায় শিশুরা তোমরা বাবা মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাও, আমাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি। বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে। মাসে দুইবার জেলগেটে যেতে পারতাম। স্কুল থেকে জেলগেটে গিয়েছি, কলেজ থেকে জেলগেটে গিয়েছি। এই ছিল আমাদের জীবন।

তিনি বলেন, তবে আমাদের কোনো ক্ষোভ ছিল না, আমরা জানি আমাদের বাবা সংগ্রাম করছেন দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। স্বাধীনতার পর থেকে তিনি সে প্রচেষ্টাই চালিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর বিজয় সরণিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য সম্বলিত মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছি। এ বাংলাদেশ একসময় আজকের বাংলাদেশ ছিল না। এমনকি ১৫ বছর আগের বাংলাদেশেও এখনকার বাংলাদেশ নয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, চিকিৎসাহীনতা, গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের ক্রন্দনে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারী ছিল। এই বাঙালি জাতিকে আত্মসম্মানে মুক্তি দেওয়ার জন্যই জাতির পিতার সংগ্রাম। জাতির পিতা নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছিল এ দেশের মানুষের জন্য।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেল, এর মধ্যে বাংলাদেশকে একটা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে রূপান্তর করতে পেরেছি। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে আমাদের ওয়াইফাই কানেকশন আছে। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষা দিচ্ছি। অনেক আধুনিক প্রযুক্তির স্থাপনা করে আজকের দেশে মানুষকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। আজকের শিশুরা হবে আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক।

মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

এর আগে, বিজয় সরণিতে জাতির পিতার ভাস্কর্য সম্বলিত মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাস্কর্যের গায়ে লেখা আছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’, তাই এটি শুধু একটি ভাস্কর্য নয়, এটি একটি ইতিহাস। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে আজ আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। ঘাতকরা তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই তার স্বপ্ন পূরণে কাজ করে আসছি।

রাজধানী ঢাকার বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি জানান, সেনা প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি স্থান নির্বাচন করার পর এই স্থানটিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। কারণ এই স্থান দিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যক্তিরা যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া, স্থানটির পাশেই রয়েছে জাতীয় সংসদসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রধানমন্ত্রী ভাস্কর্যটি স্থাপনার সঙ্গে জড়িত এবং উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

এসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.