বাবা ও ছেলে’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭
বাবা ও ছেলে’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭
নিজস্ব সংবাদদাতা :
চট্টগ্রামে পৃথক দুইটি অভিযানে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর বধুলাল হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান দুই আসামি বাবা ও ছেলে’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নিহত ভিকটিম বধুলাল দাস হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানাধীন হেলারকান্দি এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় হাওরে জমি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আসামি বাবুল এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা নিহত ভিকটিম বধুলালের প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে জমি চাষাবাদ নিয়ে দ্ব›দ্ব চলে আসছিল এবং একাধিক বার স্থানীয় ভাবে তাদের মধ্যে আপোষ মীমাংষা হয়।
পরর্বতীতে গত ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ০১০০ ঘটিকায় ভিকটিম বধুলাল দাস স্থানীয় এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক অনুুষ্ঠান শেষে বাড়ী ফেরার পথে লাখাই থানাধীন কাঠালকান্দি এলাকায় পৌছালে আসামি বাবুল মিয়া তার ছেলে করিম মিয়া এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীরা জমি চাষাবাদ এবং পূর্বশত্রæতার জেরে পরিকল্পিত ভাবে দেশী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিম বধুলাল দাসকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এবং ভিকটিমের পরিবার মুমূর্ষু অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানায় ১৩ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতমনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০২, তারিখ-১২ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩৪১/৩৪২/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা রুজু হওয়ার পর হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানা পুলিশ জানতে পারে যে, উক্ত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান ০২ আসামি (বাবা ও ছেলে) চট্টগ্রামে অবস্থান করছে।
হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানা পুলিশ এবং নিহত ভিকটিমের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে।
নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ০১নং প্রধান আসামি বাবুল মিয়া চট্টগ্রাম মহানগরীর চাদগাঁও এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ দুপুরে বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি বাবুল মিয়া (৩৫), পিতা- মৃত জবান উল্লা, সাং-চরগাঁও, থানা-লাখাই, জেলা-হবিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার ০১নং এজাহার নামীয় প্রধান আসামি মর্মে স্বীকার করে এবং এই
মামলার ০২নং এজাহার নামীয় আসামি তারই ছেলে করিম মিয়া চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন মদুনাঘাট এলাকায় অবস্থান করছে। আটককৃত ০১নং আসামির দেওয়া তথ্য মতে একই তারিখ বর্ণিত এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে আসামি করিম মিয়া (২২), পিতা-বাবুল মিয়া, সাং-চরগাঁও, থানা- লাখাই, জেলা-হবিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় তারা বাবা এবং ছেলে উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডের পরপর-ই আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়াতে নিজ জেলা হতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আলাদা-আলাদাভবে আত্মগোপন করে ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।