বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কেনাবেচা চক্রের মূল পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩

0 ৮৩

বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কেনাবেচা চক্রের মূল পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ফোনের স্বাভাবিক নেটওয়ার্কের সক্ষমতা নষ্ট করতে পারে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে বিজ্ঞাপন দিয়ে এ সব যন্ত্র অবৈধভাবে কেনাবেচা করতো একটি চক্র। তাদের কাছ থেকে সেসব যন্ত্র কিনে দুর্গম এলাকায় বসিয়ে অপরাধ কার্যক্রম চালাচ্ছে অপরাধীরা।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কেনাবেচা চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩। বুধবার রাজধানীর টিকাটুলিতে র‍্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মো. ফয়সাল হোসেন (২৭), মো. আশিক শেখ (২০), মো. শরিফুল (২৪), ও মো. রাসেল (২৬)। তাদের কাছ থেকে ১২টি নেটওয়ার্ক বুস্টার, ১৬টি বুস্টার আউটডোর এন্টেনা, তিনটি রেডিও ট্রান্সমিটার, ১২টি বুস্টার ইনডোর এন্টেনা, তিনটি বুস্টার ক্যাবলসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চক্রটি অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতো। এ সব যন্ত্র টু, থ্রি ও ফোর-জি মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এ কারণে অপরাধীরা উচ্চমূল্যে এসব যন্ত্রপাতি কিনে দুর্গম এলাকায় বসে অপরাধ করে আসছে। এসব যন্ত্র ব্যবহার করে অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর চেষ্টা করে।’

কর্নেল আরিফ বলেন, ‘ফোর-জি রাউটার আমদানির নামে এ সব যন্ত্রাংশ দেশের বাজারে নিয়ে আসা হয়। এছাড়া চোরাই পথেও এসব যন্ত্রাংশ আমদানি হয়ে থাকে। নিউমার্কেটের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এ সব যন্ত্র কিনতো চক্রটি। পরে তারা হোয়াটসঅ্যাপ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উচ্চমূল্যে সেসব যন্ত্রাংশ বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিক্রি করতো। এ সব যন্ত্রপাতি দুর্গম এলাকায় বসিয়ে অপরাধ করতো অপরাধীরা।’

তিনি বলেন, ‘চক্রটি বিগত পাঁচ বছরে অজস্র রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রি করেছে। প্রতি সেট এন্টেনা ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি সেট রেডিও ট্রান্সমিটার ছয় থেকে সাত হাজার টাকায় বিক্রি করতো। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অনুমোদন ছাড়া এ সব যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ।’

তিনি বলেন, ‘চক্রের মূল হোতা জাহাঙ্গীর দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর সে কিছুদিন একটি মোবাইল কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করে। ২০১৪ সালে সে ঢাকায় এসে সিসি ক্যামেরা মেরামত ও ইনস্টলের কাজ শুরু করে। পরে নিউমার্কেট এলাকায় ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের ব্যবসা শুরু করে নিজেই। আমদানি নিষিদ্ধ অবৈধ রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারের ব্যবসা করে। আশিক, শরিফুল ও রাসেলও ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে অভিজ্ঞ হওয়ায় জাহাঙ্গীর তার ব্যবসার প্রসারে তাদেরও দলে ভেড়ায়। তারা টেকশপ বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ বিক্রি করে আসছিল।’

এ সব অবৈধ ডিভাইস বিক্রয়কারী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র‍্যাব।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.