৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোকনের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না

0 ৮১

এম রাসেল সরকার:

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। রায়ের বাজার কবরস্থানে চাঁদা ছাড়া জায়গা নাই, ফুটপাতের যন্ত্রনায় রাস্তায় চলার উপায় নাই, কিশোর গ্যাংদের জন্য নিরাপত্তা নাই, মাদক কারবারীদের জন্য পোলাপান মানুষ করার জায়গা নাই। 

 

আমরা কোন দেশে আছি ? বোঝার উপায় নাই। ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে বিচার চাইলে সম্মান নিয়ে ফিরে আসা যায় না। এই হলো রায়ের বাজার ৩৪ নং ওয়ার্ডের প্রতিদিনের রুটিন। ফুটপাতে মোবাইল কোর্ট হয়, কাউন্সিলর সাহেব ইচ্ছে অনুযায়ী। তিনি চাইলে, তার অফিসে যোগাযোগের মাধ্যমে দাবীকৃত টাকা জমা দিলে আপনার দোকান রাস্তার মাঝে হলে উচ্ছেদ হবে না।

কিশোর গ্যাং আপনার বাড়ীতে আক্রমন করবে না, কবরস্থানে কবরের জন্য ঘাস, ফুল, পানি, বাঁশ সিরিয়াল পাইতে আপনাকে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে, টাকা দিতে না পারলে কী হবে ? আজও জানা হয় নাই। 

 

রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অঘোষিত মালিক কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকনের ভাই যুবদল নেতা শাকিল । ফুটপাতের চাঁদা উঠায় এবং কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করেন এপিএস ওয়ালটন। পাল সমিতির জমি দখল করে আছেন কাউন্সিলর নিজেই। ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এখন বিরোধী দলে, কাউন্সিলর বিএনপিতে থাকাকালীন আওয়ামী লীগাদের দ্বারা কিছুটা প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিলেন।

আজ কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন খোকন রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছে। ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আদর্শহীন দল ছুটো নেতৃত্ব কখনো দলের সুনাম রক্ষা দায়ীত্ব পালন করবে না। তারা টাকার জন্য দল বদল করে। 

 

এই সমস্ত নোংরা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। এলাকা ঘুরে দেখা গেলো শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তে ভেজা বটগাছটিকে গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারিত্বে কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন নিজেই বাড়ী করে আছেন, অথচ এই বটগাছের উপরে নিষেধাজ্ঞা আছে। মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করা আছে। আইনের লোক হয়ে, আইন কে অভঞ্জার নজির স্থাপন করেছেন ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন আমার ৫০ বছর রাজনৈতিক জীবন এই অরাজকতা দেখিনি, আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত দল, এই দলে যে সম্মান পেয়েছি, আদর্শের নজির দেখেছি, এখন মনে হয় কল্পনা। আমি এখন চিনতে পারি না, আচরণে বুঝবার উপায় নাই এই ছেলেরা আওয়ামী রাজনীতির অংশ।

বাঙালি জাতীয়তাবাদে ছুয়া নাই, রাজনৈতিক আদর্শ, সালাম কালামের বালাই নাই। কাউন্সিলর অফিস এখন কিশোর গ্যাং এর আড্ডা খানা বলতে পারেন। মিছিল অস্ত্র থাকে, নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। ভয় লাগে মিছিলে যাইতে। দল ছাড়তে পারি না বলে একা একা যাই। ফুটপাতের দোকানদার আবুল বলেন, প্রতিদিন তিনশত করে টাকা দিচ্ছি, টাকা কোথায় যায় বলতে পারবো না। 

 

কবরস্থানে সামনের দোকান কেনো ভাঙ্গা হলো না, এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেন না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ কারী দল নেতা। শুধু বললেন কাউন্সিলর সাহেব যা দেখিয়েছেন, যা বলেছেন আমরা তাই করেছি। কবর রক্ষণাবেক্ষণের দায়ীত্বে থাকা একজন মালির কাছে প্রশ্ন করা হয়, পাঁচ হাজার টাকা চাইলেন কেনো ? সোজা উত্তর, আমরা কাজ করি বেতন পাই।

টাকার কথা বলতে পারবেন কাউন্সিলরে ভাই। সারাদিন ৩৪ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা হলো, নাগরিক সুবিধার বালাই নাই যন্ত্রণা শেষ নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছুঁয়া থেকে বঞ্চিত এই ওয়ার্ড, মনে হয়েছে কোনো গুহা। পার্ক আছে কিন্তু ব্যবহারের উপযোগী নয়, রাস্তা আছে কিন্তু সেই রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে, পেটের বাচ্চা মরে যাবে। রাস্তা দিয়ে চলাচলের উপযোগী নয় –   

এই বিষয়ে তাকে ফোন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।  চলবে !

Leave A Reply

Your email address will not be published.