তিন মাসে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে

0 ২৬

তিন মাসে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ মার্চ ২০২৫
শুধু অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যাই নয়, বেড়েছে এসব অ্যাকাউন্টে জমা টাকার পরিমাণও।

ব্যাংকিং খাতের সার্বিক আমানতের প্রবৃদ্ধি খুব একটা ভালো না হলেও ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে মোট কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৯৫৪টি বা ৪.২৩ শতাংশ।

বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পালাবদলের পর ব্যাংকিং খাত নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তখন ব্যাংক শতভাগ নিরাপদ খাত হবে কি না, এমন দ্বিধায় অনেকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছিলেন। সে সময় এসব অ্যাকাউন্ট থেকেও আমানত উত্তোলন হয়েছিল।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিবিএসকে বলেন, সরকার পতনের পর দুর্বল ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ এ খাত নিয়ে আবার আস্থা তৈরি হয়। এছাড়া বিনিয়োগের জন্য তেমন কোনো খাত না থাকার কারণে ব্যাংকেই আমানত ফিরেছে। এজন্য এ সময় আবার কোটি টাকার ওপর অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে।

শুধু অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যাই নয়, বেড়েছে এসব অ্যাকাউন্টে জমা টাকার পরিমাণও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা অ্যাকাউন্টের আউটস্ট্যান্ডিং ব্যালান্স দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে এসব অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৭ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা।  অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে এসব অ্যাকাউন্টে জমা বেড়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা বা ৩.৭৫ শতাংশ।

একক বা ব্যক্তি পর্যায় কোটি টাকার ওপর আমানতের পরিমাণের তথ্যও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা ব্যক্তি পর্যায়ের অ্যাকাউন্ট ১ হাজার ৭২টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫৭৯টি। এসব অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

আর আগের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যক্তি পর্যায়ের ৩৩ হাজার ৮৬১টি অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৮৩ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৫.০৭ শতাংশ এবং জমা টাকা বেড়েছে ১২.৫৪ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে কোনো কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ৮ থেকে ১১ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এসব কারণে এসব ব্যাংকে গ্রাহকেরা আমানত রাখতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকিং খাতে সংস্কার শুরু হয়। সে সময় ইসলামী ধারার অনেক ব্যাংককে সরাসরি তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অবৈধভাবে কোন ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না। এরপর এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অনিশ্চয়তার কারণে এসব ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় গ্রাহকদের মধ্যে, যা ইতিমধ্যে কিছুটা কমে এসেছে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.