মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যা

0 ৪৩

মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যা

 

জেলা প্রতিনিধিলক্ষ্মীপুর

 

লক্ষ্মীপুরে মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে মো. রাজু (৩৫) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে নিহত রাজুর মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়৷

এর আগে রোববার (৩০ মার্চ) চাঁদরাতে সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের সবুজের গোজা নামক এলাকার একটি বাড়িতে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। ঈদের দিন সকালে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে মারা যায় রাজু৷

সে ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সফিক উল্লাহর ছেলে। ওই ওয়ার্ড শ্রমিকদলের দফতর সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, নিহত রাজুর ভাতিজা কবির হোসেন ও নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রেখা বেগম। তারা ওই এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানায়, রাজু রাত আড়াইটার দিকে তার ভাতিজা কবিরের বাড়িতে ঢুকে। তাকে চোর আখ্যা দিয়ে কবির চিৎকার দিয়ে লোকজন জড়ো করে রাজুকে পিটুনি দেয়। রাতভর তাকে নির্যাতন করা হয়। সকালে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় রাজু।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেন, রাজুকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়৷ তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়৷ অ্যাম্বুলেন্সে তোলার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায় সে।

নিহত রাজুর ভাই মো. ওহিদ বলেন, রাজু রাতে আমার ভাতিজা কবির হোসেনের ঘরে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার উদ্দেশে যায়। কিন্তু কবির এবং ওই বাড়ির মিজানসহ ৮-৯ জন মিলে আমার ভাইকে আটক করে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে বেদম মারধর করে। এতে আমার ভাইর মৃত্যু হয়। আমরা জড়িতদের বিচার চাই।

রাজুর মেয়ে রুবি আক্তার বলেন, চোরের অপবাদ দিয়ে আমার বাবাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার বাবা পায়ের তালুতে খেজুরের কাটা ঢুকানো হয়েছে, পা ভেঙে দিছে। মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ইট দিয়ে থেতলে দিয়েছে। পুরো শরীরে আঘাতের দাগ ছিল। সারারাত তাকে ব্যাপক নির্যাতন করে নারিকেল গাছের গোড়ায় ফেলে রাখা হয়৷ সকালে খবর পেয়ে আমরা পুলিশকে জানালে পুলিশ আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলে। তখনও জ্ঞান ছিল। পানি পান করতে চেয়েছে, দিতে পারিনি। হাসপাতালের নেওয়ার পর মারা যায়।

রাজুর বোন জেসমিন আক্তার বলেন, ভাতিজা কবিরের ঘরে মোবাইল চার্জ দিতে যায় আমার ভাই রাজু। এ কারণে কবির আশপাশের লোকজন জড়ো করে আমার ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.