দ্রব্যমূল্যের এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে

0 ৪৩

দ্রব্যমূল্যের এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে

 

dhaka post news

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

শীত মৌসুমের আগে-পরে বাজারে সবজির দামে যে স্বস্তি ফিরেছিল, তা এখন উধাও হয়ে গেছে। গত তিন-চার মাস ধরে তুলনামূলক কম দামে সবজি কিনতে পারলেও, বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশিরভাগ সবজির দামই ৮০ টাকা ছাড়িয়েছে। আবার কিছু সবজির দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা। এমন অবস্থায়, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পেঁয়াজ এবং ডিমের দামও।

 

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজির দোকানগুলোতে গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়শসহ অন্যান্য সবজি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় অধিকাংশটির দামই কেজি প্রতি ৮০ টাকা বা তার বেশি। বরবটি, কচুর লতি, পটোল, চিচিঙ্গা, বেগুন ও শালগম বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।

আর কাঁকরোল ও শজনের দাম আকাশছোঁয়া। সবজি দুটি মানভেদে ১২০-১৬০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। আর তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে করলা, লাউ, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স ও পেঁপে, যেগুলোর কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। সবচেয়ে কম দামের সবজি এখন টমেটো, যা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এছাড়া, আলু ২০-২৫ টাকা কেজি এবং কাঁচামরিচ ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিক্রেতারা dhaka post news কে বলছেন, পাইকারি বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি এবং বাড়তি পরিবহন খরচই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

 

আজমপুর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন dhaka post news কে বলেন, আমরা বেশি দামে কিনলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। গত কয়েক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বিশেষ করে পটল, বরবটি, বেগুন—এগুলোর দাম বেশ চড়া। আমাদের কেনা দাম বেশি হলে আমরা কম লাভে বিক্রি করতে পারি না। তাছাড়া, শীতের পর আগের মতো এখন আর সহজে মাল পাওয়া যাচ্ছে না। দূরের মোকাম থেকে মাল আনতে খরচ বেশি পড়ছে। এখন যে সবজিগুলো বাজারে আসছে, সেগুলোর চাষের খরচও শীতের সবজির চেয়ে বেশি। সেজন্য দামও বেশি।

পেঁয়াজের দাম নিয়ে রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আড়তে দাম বেশি। আমরা বেশি দামে কিনে আনি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে তেমন নেই।

এমন অবস্থায় বাজারের এই ঊর্ধ্বমুখী দামে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। ছুটির দিনে কিছুটা সাশ্রয়ে বাজার করার আশায় এসেও তাদের পকেটে টান পড়ছে।

আবু সালেহ নামের এক ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে গিয়ে অনেককেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবজির দাম হঠাৎ এত বেশি বেড়ে যাবে ভাবিনি। আজ পুরো সপ্তাহের বাজার করতে এসেছিলাম। কিন্তু আজ সবজির দাম অনেক বেশি। তাই প্রয়োজনের অর্ধেক পরিমাণ কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারলে ক্রেতাদেরও সুবিধা হতো এবং তাদের বিক্রিও বাড়তো।

তবে অনেক ক্রেতাই মনে করেন, বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যও দাম বাড়ার একটি কারণ। এছাড়া, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা যে দামে সবজি কেনেন তার কয়েক গুণ বেশি দামে পরে তারা বিক্রি করেন। যার নজরদারি ঠিকমতো করা হচ্ছে না বলেও মন্তব্য অনেকের।

Leave A Reply

Your email address will not be published.