শিক্ষিকা পর্দা নিয়ে লাঞ্চনা করার জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

0 ১৬

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পর্দা নিয়ে লাঞ্চনা করার জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

 

বিজয় ত্রিপুরা, জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান

এপ্রিল ২৮, ২০২৫

 

বান্দরবানের প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের প্রাথমিক শিক্ষকদের চুড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন এক মহিলা শিক্ষিকাকে পর্দা করার কারণে অপ্রাসঙ্গিক ও লাঞ্চনা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন খানের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় মৌখিক চলাকালীন লাঞ্চনা করতে দেখে অন্যান্য কর্মকর্তারাও প্রতিরোধ করতে ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ আছে প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

 

জানা গেছে, সকালে প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের প্রাথমিক শিক্ষকদের চুড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা দিতে যান চিংকু পাড়া সরকারী প্রথামিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মাশরুফা সাঈদী তুন্না। কক্ষে প্রবেশের পর জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন খান ওই শিক্ষিকা পর্দা নিয়ে জেরা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার পরিহিত পর্দা নিয়ে কটাক্ষ, অপ্রাসঙ্গিক ও লাঞ্চনা শুরু করে। তাছাড়া পর্দা দেয়ার কারণে অন্য স্কুলে এক শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়েছে বলে হুমকিও দেন তিনি।

 

আরো জানা গেছে, চিংকু পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। সেখানে প্রতিদিন ক্লাস করাতে পাহাড় ও ঝিড়ি ডিঙ্গিয়ে ক্লাস করাতে ছুটে যান এই শিক্ষিকা। তিনি একজন অন্ত:সত্ত্বা নারী। সেই বিদ্যালয় থেকে বদলী নিতে তার স্বামীকে নিয়ে ছুটাছুটি করেছিলেন জেলা পরিষদ্ ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। এর আগে এই শিক্ষিকা প্রায় এক বছর প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের (পিটি আই) প্রশিক্ষানাধীন ছিলেন। বদলী ও বিভিন্ন বিষয় শেষে মৌখিক পরীক্ষা দিতে যায়। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে এমন লাঞ্চনা শিকার হন এই শিক্ষিকা।

 

এদিকে ঘটনার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সাংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক স্বাক্ষরিত মাধ্যমে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

 

ভুক্তভোগী চিংকু পাড়া সরকারী প্রথামিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মাশরুফা সাঈদী তুন্না বলেন, মৌখিক পরিক্ষা দিতে যাওয়ার সময় ডিপিও স্যার আমাকে পর্দা নিয়ে অশোভনমূলক আচরণ করতে থাকে। পর্দা করলে মুখ দেখা যায় না, কোন স্কুলে শিক্ষিকা চেনা যায় না বলে মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয় এভাবে পর্দা পরিধাণ করায় অন্য এক শিক্ষিকা বরখাস্ত করা হয়েছে বলে আমাকে হুমকি দেন।

 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসার সময় শিক্ষিকাকে পর্দা কেন পড়ে আসছেন এমন প্রশ্ন করেছি’’। আর প্রায় সময় অনান্য শিক্ষিকারাও নানা সুযোগে আশ্রয় নিয়ে থাকে। এর চেয়ে আমি আর বেশী কিছু বলিনি।

 

প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর ( সাধারণ ) মোঃ মশিউর রহমান মন্ডল বলেন, সকালে ডিপিও স্যারের সাথে শিক্ষিকা পর্দা নিয়ে কিছু তর্কাকর্কি হয়েছে। পরে বিকালে শিক্ষিকা ও তার স্বামীর কাছে সরি বলে ক্ষমা চেয়ে সমাধান করা হয়েছে।

 

এবিষয়ে প্রাইমারী টিচার্স ইনষ্টিটিউটের(পিটিআই) সুপারিনটেনডেন্ট উত্তম কুমার দাশ গুপ্ত বলেন, ডিপিও সাথে এক শিক্ষিকার পর্দা নিয়ে কিছুটা বাড়াবাড়ি হয়েছে। ডিপিও স্যার তিনি হুট করে মুখে বলে ফেলেছে। কে কী পড়বে সেটা যে যার অধিকার ও স্বাধীনতা। তাছাড়া এখানে কোন লাঞ্চিত ঘটনা ঘটেনি। পরে ডিপিও পক্ষ হয়ে আমি ‘সরি’ বলে ক্ষমা চেয়ে সমাধান করেছি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.