প্রবাসীর টাকায় জমি নিলেন, ফেরত দিলেন না এক টাকাও!
নোয়াখালীতে চুক্তিপত্র ভঙ্গ করে ভয়ভীতি ও হুমকির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক,
নোয়াখালী সদর উপজেলার ব্রহ্মপুর ও কুশারামপুর গ্রামের দুই বাসিন্দা—প্রবাসী মোঃ মোহাম্মদ রিপন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ নুরুল হোসেন (লিটন)—২০২২ সালের ১০ অক্টোবর একটি জমি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দলিল নম্বর ২২৫৩৮৫ অনুযায়ী জমির মালিকানার হস্তান্তর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলেও, এখনো পরিশোধ হয়নি চুক্তিবদ্ধ টাকা—৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মোট ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১০ লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করেন মোঃ মিজানুর রহমান নামে একজন ব্যক্তি। বাকি ৮.৫০ লাখ টাকার জন্য ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, মাইজদী কোর্ট শাখার একটি চেক প্রদান করা হয়, যার নম্বর এম সি নং-২৩১৪৪৩৭ এবং একাউন্ট নম্বর ২০৫০২৫৫২০৭৯৯৭৪৫১৪। এই চেকের মালিক ছিলেন দ্বিতীয় পক্ষ মোঃ নুরুল হোসেন (লিটন)।
চুক্তিপত্রে “দেশপ্রেমের শপথ নিন, দুর্নীতিকে বিদায় দিন” স্লোগান সংযুক্ত করা হয়, যার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও সততার প্রতীক হিসেবে চুক্তিকে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। অভিযোগ অনুযায়ী, দ্বিতীয় পক্ষ দিনের পর দিন ‘তারিখের পর তারিখ’ দিয়ে টাকা ফেরত না দিয়ে নানা তালবাহানা করছেন। এমনকি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভয়ভীতি ও হুমকির মাধ্যমে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চুক্তি আইন, ১৮৭২-এর ধারা ৩৯ ও ৭৩ অনুসারে চুক্তি ভঙ্গের কারণে ক্ষতিপূরণের মামলা করা যায়। একই সঙ্গে, পরিদর্শনযোগ্য উপকরণ আইন, ১৮৮১-এর ধারা ১৩৮ অনুযায়ী চেক প্রত্যাখ্যান একটি ফৌজদারি অপরাধ, যার সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর কারাদণ্ড বা দ্বিগুণ অর্থদণ্ড হতে পারে। ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ অনুযায়ী দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারা অনুযায়ী মামলাও দায়ের করা সম্ভব।
প্রবাসী মোঃ রিপনের পরিবার জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো সমাধান হয়নি। এখন তারা ন্যায়বিচারের আশায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয়—শুধু কাগজে-কলমে স্বচ্ছতা ও সততার স্লোগান যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন বাস্তবায়ন এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ। সমাজের প্রতিটি স্তরে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর এখনই সময়।