গেন্ডারিয়া স্টেশনের চারপাশ অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে

0 ১২

গেন্ডারিয়া স্টেশনের চারপাশ অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ জুলাই ২০২৫
গেন্ডারিয়া স্টেশনের চারপাশ অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এখানে চুরি ছিনতাই বেড়েই চলেছে। মাদক কারবারিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এদিকে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের অসন্তোষ বেড়েই চলেছে। তাদের দাবি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এর জন্য দায়ী।

যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নির্ধারিত রেলসেবার মান ঠিক না রাখা, ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত অবস্থায় ট্রেন চলাচল, রেললাইনের দু’পাশ অবৈধ দখল করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, প্রতি স্টেশনে কালক্ষেপণ, প্রতিটি লেভেলক্রসিংয়ে যথোপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা ও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে।

অথচ এত অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও যাত্রীদের ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই। জানা যায়, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ১৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ স্টেশন থেকে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনের দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার। আর নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেন নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া, ফতুল্লা, পাগলা ও ঢাকার শ্যামপুর, গেন্ডারিয়া হয়ে কমলাপুর আসে।

এ রেললাইনের মধ্যে কমপক্ষে ৪৫টি অবৈধ লেভেলক্রসিং আছে, যেখানে কোনো ব্যারিকেড বা যথোপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ওই রুটে ১৩টি বৈধ রেলগেট রয়েছে, যেখানে যাত্রী ওঠানামায় কোনো শৃঙ্খলা নেই। পাশাপাশি প্রতিটি ট্রেনেই ধারণক্ষমতার বাইরে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী চলাচল করে। আর প্রথম স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেন অন্য স্টেশনে এলে যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে ওঠে। এদিকে ঠিকমতো চেকিং না হওয়ায় বিনা টিকিটে অনেকেই ট্রেনে চলাচল করে। তাই যাত্রী বহনের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত অবস্থায় চলছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন সার্ভিস। ওই রুটের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্টেশনের রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজার, ফলের দোকান, মার্কেটসহ অসংখ্য অস্থায়ী বসতঘর। তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেন চলাচল করছে জুরাইন রেললাইন দিয়ে, যা এখন পুরোটাই হকারদের দখলে। এক্ষেত্রে শ্যামপুর মডেল থানা পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকায় এখানে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

গেন্ডারিয়া স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশনটিতে ২৪ ঘণ্টাই মাদকসেবীদের বিচরণ। পাশাপাশি যাত্রীদের চাপ থাকায় এখানে দিনে দিনে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। স্টেশনে রেলওয়ে পুলিশ না থাকায় জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। আর সিসি ক্যামেরা না থাকায় গেন্ডারিয়া রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে চোর ও ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। প্রভাবশালীদের মদদে রেললাইনের দু’পাশে অবৈধ দখল করে দোকানপাট স্থাপন করা হয়েছে।

সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেন লাইনে ভাড়ার তুলনায় সেবার মান নেই বললেই চলে। এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া স্টেশনের মাস্টার মো. কামরুল হাসান  বলেন, গেন্ডারিয়ায় স্টেশনের চুরি-ছিনতাই, মাদকদ্রব্য ও জুয়ার আসর বেড়েই চলছে বলে নিয়মিত অভিযোগ পাচ্ছি।

এ স্টেশনে রেলওয়ে পুলিশের ব্যবস্থা করাসহ পুরো স্টেশন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে পারলে এসব সমস্যা অনেকটা কমে আসবে। আর ভালোভাবে চলাচলের জন্য গেন্ডারিয়া স্টেশনের আন্ডারপাস ব্রিজ চলিত মাসের ২২ তারিখে উদ্বোধন করা হবে। এটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করলে ভালো হবে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.