খাগড়াছড়িতে গঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল দল

0

খাগড়াছড়িতে গঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল দল: ক্রীড়া উন্নয়ন ও সামাজিক সম্প্রীতির যুগান্তকারী পদক্ষেপ

 

আরিফুল ইসলাম মহিন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং প্রতিভাবান কিশোরীদের এগিয়ে আনতে গঠন করা হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল দল। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই উদ্যোগে স্থানীয় তরুণীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। খেলাধুলায় মেয়েদের অংশগ্রহণ শুধু যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা-ই নয়, বরং তারা এখন জাতীয় দল পর্যন্ত যাওয়ার স্বপ্নও দেখছে।

এই নারী ফুটবল দল গঠনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি ও সমতলের কিশোরীরা তাদের প্রতিভা প্রকাশের একটি সুনির্দিষ্ট সুযোগ পেয়েছে। অনুশীলনের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, ফিটনেস ক্যাম্প ও নিয়মিত খেলা আয়োজন করে খেলোয়াড়দের উন্নয়ন নিশ্চিত করছে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন। খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা, মানসিক দৃঢ়তা এবং শৃঙ্খলাবোধ তৈরিতে নেয়া হয়েছে পরিকল্পিত উদ্যোগ।

ফুটবল দলের সদস্যদের আবাসন, পুষ্টিকর খাবার, খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গৃহীত হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। ফলে একজন উঠতি কিশোরী খেলোয়াড় তার পরিবার কিংবা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার চিন্তা ছাড়াই পুরো মনোযোগ দিতে পারছে মাঠে।

এই উদ্যোগকে আরও সুসংহত করতে পাশে দাঁড়িয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজ এবং সেনাবাহিনী। রবিবার ( ২৭ জুলাই ) খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নারী ফুটবল দলের উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে চেক হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সেনা জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, সদর রিজিয়নের জিটু আই মেজর কাজী মোস্তফা আরেফিনসহ ফুটবল দলের কোচ, কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

এই ক্রীড়া উদ্যোগ শুধুই মাঠের খেলা নয়, বরং এটি পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির এক সুন্দর মেলবন্ধনের প্রতীক। একসঙ্গে খেলে, অনুশীলন করে এবং একে অপরের সঙ্গে সময় কাটিয়ে কিশোরীরা শিখছে একতাবদ্ধ থাকার শিক্ষা। এমন প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও দৃঢ় করতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

নারী ফুটবল দলের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই দল থেকে ভবিষ্যতে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসবে, যারা জাতীয় দলেও খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। খাগড়াছড়ির মাঠ থেকে উঠে আসা মেয়েরা একদিন দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে — এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সকল মহলের সহযোগিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এই অনন্য উদ্যোগ পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক ও ক্রীড়াঙ্গনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.