ঘুষে গড়া সাম্রাজ্য: বিআরটিএর এক কর্মকর্তার লুকানো সম্পদের অনুসন্ধান (পর্ব–১)
ঘুষে গড়া সাম্রাজ্য: বিআরটিএর এক কর্মকর্তার লুকানো সম্পদের অনুসন্ধান (পর্ব–১
বসুন্ধরায় বাড়ি, বিলাসবহুল গাড়ি; লাইসেন্স বাণিজ্যে কোটি টাকার অভিযোগ ।
সত্যদেব রায়,
Aug 2, 2025 at 17:52
বিআরটিএ’র (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) এক সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্যক্রমে ঘুষ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওই কর্মকর্তা তার দালালের মাধ্যমে লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের অবৈধ অর্থ লেনদেন করে আসছেন। এই অবৈধ আয়ের জোরেই তিনি রাজধানীর অভিজাত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাড়ি-ফ্ল্যাট ও ব্যক্তিগত বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন জিয়াউর রহমান, সহকারী পরিচালক (এডি), লাইসেন্স বিভাগ, বিআরটিএ (নিকুঞ্জ কার্যালয়)। সরকারি চাকরির সীমিত আয়ের সাথে তাঁর এই বিপুল সম্পদের সামঞ্জস্য নেই বলেই দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অফিস-সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
মাঠপর্যায়ে তার পক্ষে কাজ করেন বেশ কয়েকজন দালাল, যাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত নাম সোহেল হাওলাদার। অভিযোগ রয়েছে, এই সোহেল হাওলাদারের মাধ্যমেই লাইসেন্স নিতে আসা সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে ঘুষ আদায় করা হয়। দালাল ছাড়া সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক আবেদনকারী।
লাইসেন্স আবেদনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দিলে খুব অল্প সময়েই ট্রায়াল, মেডিকেল, রেজিস্ট্রেশনসহ সব প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়। এক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সোজাসুজি গেলে অফিসে কেউ কাজ করতে চায় না। কিন্তু সোহেল ভাইয়ের মাধ্যমে গেলে দুই দিনের মধ্যে সব হয়ে যায়।
সরকারি চাকরিতে তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও জিয়াউর রহমান এরই মধ্যে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বাড়ির মালিক হয়েছেন এবং ব্যয়বহুল গাড়ি চালান। এই বিপুল সম্পদের উৎস নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
বিআরটিএ’র মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে এমন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মানুষের বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে হলে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
উল্লেখ্য, এ রিপোর্টের জন্য অভিযুক্ত সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমানের বক্তব্য নিতে একাধিকবার কল করা হয়েছে এবং হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত তিনি কোনো উত্তর বা প্রতিক্রিয়া জানাননি।
পরবর্তী পর্বে থাকছে: জিয়াউর রহমানের সম্পদের বিস্তারিত তালিকা, দালাল চক্রের গোপন নেটওয়ার্ক ও ক্ষমতার বলয়…..!