তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী – মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী – মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেন। এসময় কাউন্সিলে আগত সবাই করতালি দিয়ে তার এ বক্তব্যকে স্বাগত জানান। তারা তারেক রহমানের নামে স্লোগান দিতে শুরু করেন। মির্জা ফখরুল তাদের থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘স্লোগান দেবেন না, স্লোগানের রাজনীতি বাদ দিতে হবে, প্লিজ স্লোগানের রাজনীতি বাদ দিতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা, ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি, ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী আজকে এখানে (ভার্চুয়ালি যুক্ত) বসে আছেন, আমি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, এই বিষয়টাকে (স্বাস্থ্য খাতকে) অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে।
স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতা, ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী তার দৃষ্টিতে এটা আনতে চাই। তার স্ত্রী একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক। স্বাস্থ্য খাতে তিনি বেশি গুরুত্ব দেবেন। কারণ এই দেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, এটা বিশাল একটা দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।
ওষুধনীতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা ওষুধ তৈরি করেন, ম্যানুফ্যাকচারারস, তারা দুদিন আগে আমার কাছে এসেছিল। তারা বলেছে, সিরিয়াস ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। বর্তমান সরকারের যিনি সহকারী উপদেষ্টা আছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের, তিনি এমন কতগুলো ব্যবস্থা-আইন দিচ্ছেন যাতে করে ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এই যে বিষয়গুলো এগুলো কিন্তু আমাদের অ্যাড্রেস করতে হবে। যেখানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছিল। বাইরে রপ্তানি করছিল। এখন তারা বলছে যে আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিতে হবে। অর্থাৎ এই সরকারের নীতিগুলো এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে যে ৩১ দফা দিয়েছেন, জাতির সবচাইতে প্রয়োজনীয় দফাগুলো দিয়েছেন, যেটাকে ‘ম্যাগনা কার্টা’ (ঐতিহাসিক দলিল) বলি আমরা। সেখানে কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথা তিনি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার করেছেন।
জুলাই আন্দোলনকালে অনেক চিকিৎসককে আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা ওই সময়ে ঝুঁকি নিয়ে আহতদের চিকিৎসা করেছেন, এটা জাতি কোনোদিন ভুলবে না।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, অনুরোধ রাখতে চাই যারা (জুলাই আন্দোলনে) আহত আছে তাদের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা যেন এই সরকার গ্রহণ করে। এটা আমাদের অত্যন্ত বড় একটা চাওয়া, এই দেশের মানুষের চাওয়া।
ড্যাবের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আমি আশা করি এরপর আপনাদের সংগঠনকে আপনারাই (ড্যাব) পরিচালনা করবেন। নিজেরাই নির্বাচন করবেন। হয়তো এটা আপনাদের অনেকের পছন্দ হবে না। আরেকটি কথা বলতে চাই, ড্যাবকে অন্যান্য সাধারণ সংগঠনের সঙ্গে এক করে ফেলবেন না। একদিকে আপনারা মানুষের সেবা দিচ্ছেন অন্যদিকে এই দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবেন, স্বাস্থ্যনীতি তৈরি করতে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সহায়তা করবেন।
কারাগারে নিজের অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি যখন কাশিমপুর জেলে থেকে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ি, যখন পিজিতে রেফার করল জেল কর্তৃপক্ষ। আমি আসলাম হুইলচেয়ারে তো বটেই, অত্যন্ত অসুস্থ ছিলাম। আমাদের চিকিৎসকরা যারা তখন পিজিতে ছিলেন তারা দেখেছেন যে আমি উঠে দাঁড়াতে পারছিলাম না, বসে ছিলাম। আমাকে সারাদিন ওই হুইলচেয়ারে ডিরেক্টরের রুমের সামনে বসিয়ে রাখল। তাদের ন্যূনতম সেই সৌজন্যটুকু হয়নি যে আমাকে ভেতরে গিয়ে বসিয়ে চিকিৎসা করাবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয় আমার তখন ক্যারোটিড আর্টারি ব্লক হয়ে গিয়েছিল। সেই আর্টারি চিকিৎসার জন্য আমাকে পিজির চিকিৎসক রেফার করলেন বিদেশে পাঠানো দরকার। সরকার অনুমতি দেয়নি। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে ৩ বার রিট করে মেডিকেল বোর্ড তৈরি করে বাইরে যেতে হয়েছে। এটা কেন? আমরা পারস্পরিক হিংসা ও জিঘাংসার একটা কালচার তৈরি করেছি, এটা আমাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে।