মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে মাকে অপহরণের অভিযোগ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় প্রবাসী ছেলের মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তার মাকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে একটি দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার এবং একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার মানাখান বড়ইতলা এলাকা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন লিয়াকত আলী শেখ, তিনি ওই এলাকার মৃত সোহরাব আলী শেখের ছেলে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার কদমতলা গ্রামের যুবক আরেফিন আহমেদকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ছয় মাস আগে তুরস্ক ও পরে লিবিয়ায় পাঠান স্থানীয় দালাল লিয়াকত আলী শেখ। এরপর চক্রটি আরেফিনকে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৩০ লাখ টাকা আদায় করে। জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে ওই টাকা দালালদের হাতে তুলে দেন পরিবার।
ইতালিতে পৌঁছানোর আগেই দালাল চক্র আরও ৮ লাখ টাকা দাবি করে। পরিবার ওই টাকা জোগাড়ে ব্যর্থ হলে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে চাকধ বাজার এলাকা থেকে আরেফিনের মা সুমি বেগমকে কৌশলে অপহরণ করে লিয়াকত আলীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
সুমি বেগম জানান, “প্রথমে ১৪ লাখ, পরে আরও ১৬ লাখ টাকাসহ মোট ৩০ লাখ টাকা দিয়েছি। এরপরও তারা আরও ৮ লাখ টাকা চায়। আমি রাজি না হওয়ায় বুধবার সকালে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে লিয়াকত জোর করে আমাকে গাড়িতে তুলে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করে এবং মুক্তিপণের জন্য চাপ দেয়। পরে আমার স্বামী থানায় জানালে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।”
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন মোল্লা dhaka post news কে বলেন, “আমরা সংবাদ পেয়ে দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করি এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পরিবারকে সকল প্রকার সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে সহজ-সরল মানুষদের বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা করে আসছে। এখন তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে মুক্তিপণ না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।”