বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মীকে মামলার আসামি করা হয়েছে
কিশোরগঞ্জ , জেলা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলায় ৬৬ মামলার বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি সভাপতি মো. শরীফুল আলমসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৩১ নেতাকর্মী। এসব মামলার ভয়ে জেলা উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মী-সমর্থকরাও বাড়ি ছাড়া।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা রয়েছে ৬৬টি। এ মামলাগুলোতে প্রায় ৬০০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম, কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের আহ্বায়কসহ ২৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে নিজেরা হামলা করে তারাই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সন্ধ্যার পর থেকেই প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। নিরীহ মানুষদেরকে গ্রেপ্তার করে বিএনপির মামলায় চালান দিচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মী না পেয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় পরিবারে অন্য সদস্যদের কে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যা ১৯৭১ সালের নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে। সরকারকে বলবো অবিলম্বে পদত্যাগ করুন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমাদের গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের দাবির মুখে আপনাকে পালাতে হবে।
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাকুন্দিয়া থানায় ৬ মামলায় গ্রেপ্তার ৩৯, কটিয়াদী থানায় এক মামলায় ৮, সদর থানায় ১১ মামলায় ৩৮, হোসেনপুর থানায় তিন মামলায় ২৭, ভৈরব থানায় ১৩ মামলায় ২২, কুলিয়ারচর থানায় ১৯ মামলায় ৬, বাজিতপুর থানায় মামলায় তিন মামলায় ৩০, নিকলী থানায় দুই মামলায় ২০, মিঠামইন থানায় দুই মামলায় ১, ইটনা থানায় একটি মামলায় ১, তাড়াইল থানায় তিন মামলায় ১৫ ও করিমগঞ্জ থানায় ১ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৪ জন।
উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর শনিবার ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের হামলা, গুলিবর্ষণ এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক ও আহত করার প্রতিবাদে পরের দিন রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি। একদিন কর্মসূচি বিরতি দিয়ে আবার ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ পালন করে বিএনপি।
গত মঙ্গলবার বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি চলার সময় জেলার কুলিয়ারচরে পুলিশের সঙ্গে ও ভৈরবে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সে সময় কুলিয়ারচরে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন এবং পরদিন ভৈরবে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে জেলায় তিন বিএনপি সমর্থক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যেই গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আধা বেলা হরতাল পালন করে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি। এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জ জেলায় রোববার অর্ধবেলা হরতাল পালন ও ভৈরবে সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে উপজেলা পৌর বিএনপি।